দেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ

Posted: মার্চ 8, 2012 in Uncategorized

মূল লেখাটা পাবেন: এই ঠিকানায়

 

সারাবিশ্বের মতো ৪ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালন করা হয়েছে।  দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিলো, ‘টুগেদার ইট ইজ পসিবল অর্থাৎ সবাই মিলে ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব।

বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. ওবায়েদুল্লাহ বাকী জানান, দেশে বর্তমানে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় ১২ লাখ। প্রতিবছর এ রোগে দেশে প্রায় দুই লাখ লোকের মৃত্যু ঘটে। বছরে আক্রান্ত হয় প্রায় তিন লাখ মানুষ।  এই রোগীদের মধ্যে ফুসফুস, মুখগহ্বর, রক্তনালি, জরায়ু ও স্তনে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। মহিলা রোগীদের মধ্যে শতকরা ৩০ ভাগ জরায়ু-মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত।

তিনি আরো বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা একেবারেই নাজুক পর্যায়ে রয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুসারে মোট জনসংখ্যার দিক থেকে দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার ব্যবস্থাসম্পন্ন কমপক্ষে দেড়’ শ (১০ লাখে একটি ধরে) সেন্টার থাকা অপরিহার্য। সেখানে আছে মাত্র ১৮টি। বেশির ভাগ সেন্টারে যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হচ্ছে তা এখন আর কার্যকর নয়।

ক্যান্সার নিয়ে কাজ করে এমন সরকারি ও বেসরকারি সূত্রগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছেন ১১০ জনের মতো। অনকোলজিস্ট নার্স নেই।

সরকারিভাবে সারা দেশে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য পাঁচ শর মতো বেড রয়েছে। কমপক্ষে ৩০০টি যন্ত্র অপরিহার্য হলেও দেশে এমন যন্ত্র রয়েছে মাত্র। ১৫টি। এর মধ্যে আধুনিক লাইন্যাক মেশিন আছে মাত্র পাঁচটি । পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর দু-একটিতে অত্যাধুনিক কিছু যন্ত্রপাতি ও চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ ই মাহবুব বলেন, `ক্যান্সারের চিকিৎসক বলতেও রেডিও থেরাপির সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদেরই বোঝানো হয়। ক্যান্সার চিকিৎসায় এখন তাঁদের পাশাপাশি সার্জিক্যাল ও মেডিক্যাল অনকোলজিস্ট একেবারেই অপরিহার্য, কিন্তু আমাদের দেশে এমন কোনো বিষয়ই নেই।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হলো তামাক। মানুষের খাদ্যাভ্যাসের কারণেও ক্যান্সার ছড়ায়। খাবারে বিষ, মাছে ফর্মালিন, ফল পাকাতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে যথেচ্ছ হারে। এসব রাসায়নিক শরীরে গিয়ে ক্যান্সার সৃষ্টি করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস যকৃতে সিরোসিসের কারণ। যকৃত সিরোসিস প্রতিরোধের জন্য রয়েছে টিকা। কিন্তু দাম বেশী।

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারিভাবে বয়স্কদের জন্য হেপাটাইটিস বি ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাক্সিন দেয়া হলে এর দাম কমে যেতে পারে।

হেলিকো ভ্যাক্টর পাইলেরি পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণ, হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস জরায়ু ক্যান্সারের কারণ। এরও টিকা রয়েছে।

জরায়ু ক্যান্সারের টিকা বেসরকারিভাবে কিনে দিতে হলে প্রতিটির পেছনে খরচ হয় তিন হাজার টাকা। সরকারিভাবে দেয়ার ব্যবস্থা করলে এর দাম পাঁচ থেকে ছয়শ’ টাকায় নেমে আসতে পারে।

ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কর্মকৌশল প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ল্যাব এইড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের মধ্যে জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত ২৫ শতাংশ ক্যান্সার মৃত্যুর হার কমাতে হলে সরকারকে জরুরিভাবে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য রোগ প্রতিরোধ করা, সূচনাতে রোগ নির্ণয়সহ চিকিৎসার জন্য রেডিও থেরাপি মেশিন ও স্বল্পমূল্যে কেমোথেরাপি ওষুধ রোগীদের জন্য সরবরাহ করতে হবে।

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান